
জেমস আব্দুর রহিম রানা:: যশোরের কেশবপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট বদরুজ্জামান মিন্টুকে হাজারো মানুষের অশ্রুসিক্ত উপস্থিতিতে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে কেশবপুর পাবলিক ময়দানে জানাজা নামাজ শেষে পৌরসভার বালিয়াডাঙ্গা এলাকার পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
সকালের পর থেকেই তার মরদেহ মাঠে আনা হলে তাকে শেষবারের মতো দেখতে দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে। রাজনৈতিক নেতা, আইনজীবী, সাংবাদিক, পেশাজীবী সংগঠনসহ সাধারণ মানুষ নীরব শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন প্রয়াত এই আইনজীবী ও সংগঠককে।
গত শনিবার রাতে ভারতের দিল্লির একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অ্যাডভোকেট বদরুজ্জামান মিন্টু মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৯ বছর। তিনি দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগে ভুগছিলেন।
কেশবপুর পৌরসভার বালিয়াডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা মিন্টু ছিলেন প্রয়াত মন্ত্রী ও বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামের আপন ভাগনে। মৃত্যুর খবর দেশে পৌঁছানোর পর থেকেই শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি হয় কেশবপুর ও যশোরে। তার বাড়িতে শোকসন্তপ্ত মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে সারাদিন ধরেই। এলাকার মানুষ, রাজনৈতিক সহযোদ্ধা, সহকর্মী আইনজীবী, সাংবাদিকসহ অসংখ্য মানুষ তাকে দেখতে ছুটে আসে।
মঙ্গলবার দুপুরে জানাজা নামাজ শুরুর আগে মাঠে দাঁড়িয়ে স্মৃতিচারণ করেন কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা। বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, কেন্দ্রীয় সহধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, যশোর জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, কেশবপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হোসেন আজাদ, কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী সদস্য ও যশোর-৬ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ-
কেশবপুর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির ও দাড়িপাল্লা প্রতীকের মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক মুক্তার আলী,জেলা বিএনপি নেতা মারুফুল ইসলাম মারুফ, মনিরামপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি শহীদ ইকবাল হোসেন, কেশবপুর পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুস সামাদ বিশ্বাস,সাবেক আহ্বায়ক মশিয়ার রহমান, ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আলা, আইনজীবী অজিয়ার রহমান এবং জেলা আইনজীবী সমিতির প্রতিনিধিসহ আরও অনেকে।
তারা বলেন, অ্যাডভোকেট বদরুজ্জামান মিন্টু ছিলেন একজন সৎ, নির্লোভ, সংগঠনের প্রতি নিবেদিতপ্রাণ নেতা। কেশবপুর বিএনপিকে সংগঠিত করতে, আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় রাখতে তিনি সবসময় সামনে থাকতেন। তার মৃত্যুতে কেশবপুর উপজেলা বিএনপি এবং জেলার রাজনৈতিক অঙ্গনে যে শূন্যতা তৈরি হলো তা সহজে পূরণ হওয়ার নয়।
এদিকে, জানাজা নামাজের পর প্রয়াত নেতার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ–সভাপতি অধ্যাপিকা নার্গিস ইসলামসহ যশোর জেলা বিএনপি, কেশবপুর উপজেলা ও পৌর বিএনপি, মনিরামপুর উপজেলা বিএনপি, জেলা আইনজীবী সমিতি,৬নম্বর ইউনিয়ন পরিষদ, পূজা উদযাপন পরিষদ ও পূজা উদযাপন ফ্রন্ট, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট, কেশবপুর প্রেসক্লাব, উপজেলা প্রেসক্লাব, থানা প্রেসক্লাব, রাবিয়ান কেশবপুর, কৃষক দল, শ্রমিক দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, উদিচি শিল্পগোষ্ঠী, বন্ধু মহলসহ বিভিন্ন সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন।
এ সময় তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে মানুষের সারি দীর্ঘ হতে থাকে। কেশবপুরের সাধারণ মানুষও স্বজন হারানোর বেদনায় শোকাহত পরিবেশ সৃষ্টি করেন। জানাজা পরিচালনা করেন কেশবপুর ডাক্তারখানা জামে মসজিদের খতিব মুফতি ফজলুল করিম কাসেমী।